1. news@banglaislamicnews.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৩ পূর্বাহ্ন

বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের আর্থিক খাত ঝুঁকিতে: আইএমএফ

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩
  • ৪৪৬ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, বৈশ্বিক মন্দার নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়েছে। এই প্রভাব আগামী দিনগুলোয় আরও প্রকট হবে। এতে বৈশ্বিক আর্থিক খাতের মন্দার মতো বাংলাদেশের আর্থিক খাতেও মন্দা দেখা দিয়েছে। এ খাতে ঝুঁকিও বাড়ছে। বিশেষ করে বৈদেশিক খাত থেকে এ ঝুঁকি সংক্রমিত হয়ে অভ্যন্তরীণ খাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। আইএমএফ-এর এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত অর্থনীতির সাত জাতিগোষ্ঠীর ‘গ্রুপ জি সেভেন’ দেশগুলোর অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতির নিবিড় যোগসূত্র রয়েছে। দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালি। বড় অর্থনীতির দেশ হিসাবে এসব দেশকে আইএমএফ স্বীকৃতি দিয়েছে। দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যেমন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বেশি, তেমনই রেমিট্যান্সের একটি বড় অংশ এসব দেশ থেকে আসে। 

এতে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ওইসব দেশে পণ্যমূল্য বেড়ে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে গেছে। এ হার ঠেকাতে দেশগুলো সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করছে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড আরও সংকোচিত হয়েছে। ঋণের সুদের হার বেড়ে গেছে। ব্যাংকে তারল্যের প্রবাহ কমেছে। অর্থনৈতিক মন্দায় ওইসব দেশ থেকে রপ্তানি আয় কমে গেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়লেও এর বিপরীতে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে ওইসব দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আসার হার কমেছে। বেড়েছে ব্যয়ের হার। ফলে ওইসব দেশ থেকে বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা আসার কারণে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে যে তারল্যের জোগান বাড়ত, সেটি এখন হচ্ছে না। এছাড়া ওইসব দেশ থেকে পণ্য আমদানির নামে একধরনের মূল্যস্ফীতি দেশে আসছে। এতে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে দেশের আর্থিক খাতে ঝুঁকির প্রবণতা বাড়ছে। 

এতে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্ধিত আমদানি ব্যয় মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ, রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহে নিæগতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেছে। বেড়েছে পণ্য ও সেবার দাম। এতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। ফলে খাদ্য কিনতে গিয়ে মানুষ আর সঞ্চয় করতে পারছে না। এতে একদিকে সঞ্চয় কমেছে, অন্যদিকে ডলারের প্রবাহ কমায় ব্যাংকে তারল্যে কমেছে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জি সেভেন দেশগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বাংলাদেশ ছাড়াও চীন, ভারত, ইরান, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, মিসর, হংকং, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান, ইরাক, কাতার ও কুয়েত একই আঙ্গিকে জড়িত। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মন্দার কারণে ওইসব দেশ থেকে রেমিট্যান্স কমেছে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের কারণেও রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। এছাড়া ওইসব দেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ বেড়েছে। বিনিয়োগের বিপরীতে আয়ের হারও কমেছে। কারণ বিনিয়োগ থেকে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি কমে গেছে। ফলে উদ্যোক্তাদের আয়ও কমেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, কমবেশি অনেক দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে। বাংলাদেশেও কমেছে। রিজার্ভ কমায় বাজারে ডলারের দাম বেড়ে গেছে। অন্যদিকে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের তুলনায় আমদানি ব্যয় বাড়ায় ডলার সংকট বেড়েছে। বৈশ্বিকভাবে ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, পণ্যমূল্য বৃদ্ধি এবং সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় আর্থিক খাতে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। এ ঝুঁকির মধ্যে বাংলাদেশও পড়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Copyright ©banglaislamicnews.com
Theme Customized By BreakingNews