1. news@banglaislamicnews.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৮ অপরাহ্ন

বঙ্গবাজার অগ্নিকান্ডের দায় নিয়ে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত : সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩
  • ২৯৮ বার পড়া হয়েছে

বঙ্গবাজার মার্কেটের অগ্নিকান্ডের দায় সরকার ও তার বিভিন্ন সংস্থার বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এটার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী সরকার। এই দায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ করা উচিত। কারণ একটা কাঠের স্ট্রাকচার বলা যায়-সেটা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে ফেলে রেখে সরকার বলুন, সরকারের যে সমস্ত সংস্থা আছে যারা এসবের দায়িত্বে রয়েছে তারা বা সিটি করপোরেশন কেউই কিন্তু এই দায়িত্বটা পালন করেনি। আমরা মনে করি, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর উদাসীনতা, অযোগ্যতা, দুর্নীতি ও নজরদাবির অভাবের কারণ এই ধরনের ভয়াবহ পরিণতির স্বীকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। গত বুধবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কী দুর্ভাগ্য এদেশের যে এতো উন্নয়ন, চতুর্দিকে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। অথচ অগ্নি নির্বাপণের জন্য যে আধুনিক ব্যবস্থা করা দরকার সেই ব্যবস্থাগুলো এখানে নেই। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে যে কাজগুলো ফায়ার ব্রিগেড করতে পারে সেই ইকুইপমেন্টসই তাদের নেই। এটা ফায়ার বিগ্রেডের দোষ না। এটা হচ্ছে যারা সরকার চালাচ্ছে, তারা জনসাধারণের সেবার জন্য যে কাজগুলো দরকার সেটাকে তারা গুরুত্ব দেয় না। তাদের গুরুত্ব হচ্ছে কোনখানে কমিশন বেশি, তাদের টাকা উপার্জন বেশি হবে সেগুলোতে তাদের প্রায়োরিটি। আমরা মনে করি, এটার জন্য দায়ী সম্পূর্ণ সরকারের। এই দায় নিয়ে তাদের পদত্যাগ করা উচিত।

সিদ্দিকবাজারে অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সিদ্দিকবাজারে কিছু দিন আগে যে ঘটনা ঘটেছে তাতে তাতে ২১ জনের প্রাণ গেছে। এখানে (বঙ্গবাজার মার্কেট) আল্লাহর রহমতে কারো প্রাণ যায়নি। কিন্তু যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে সেটা ভয়ংকর। এই নি¤œ আয়ের মানুষগুলো অথবা সাধারণ ব্যবসায়ীদের প্রচÐভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে, অনেকে নিঃস্ব হয়ে গেছেন এবং সেটা ঈদের আগে যখন তাদের সর্বস্ব পূঁজি বিনিয়োগ করেছে।

রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে মানবাধিকার বিরোধী কাজ বন্ধের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স¤প্রতি জার্মান মিডিয়া ডয়েচে ভেলেতে র‌্যাবের ওপর একটা ডকুমেন্টারি বেরিয়েছে। এটা খুব সেনসেটিভ হওয়ার কারণে আমাদের দেশের বেশিরভাগ পত্রিকায় কোনো নিউজ করেনি, কেউ বলেনওনি। সেনসেটিভ হলেও এটা বাস্তবতা। ‘ডয়েচ ভেলে’ করেছে।এই ডকুমেন্টারি বিরুদ্ধে নেগেটিভ কোনো কিছু, যে অস্বীকার করা সেটাও কিন্তু আসেনি।

তিনি বলেন, এই ডকুমেন্টারি প্রমাণ করেছে যে, অনির্বাচিত সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে অবৈধভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। কি ভয়ংকর! যদি এমন হয় যে, সরকারের সর্বোচ্চ মহল থেকে, শীর্ষ পর্যায় থেকে যদি নির্দেশ দিয়ে এসমস্ত কাজ করা হয় তাহলে এসব সংস্থাগুলো কি ভয়ংকরভাবে জনগণের মানবাধিকার কিভাবে তারা লঙ্ঘন করতে পারে তার প্রমাণ। সরকার রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ব্যবহার করে মানবাধিকার বিরোধী, সংবিধান বিরোধী এসব কাজ করছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা বন্ধের দাবিও জানান তিনি।

সুলতানা জেসমিনের ঘটনায় যুগ্ম সচিব এখনো বাইরে রয়ে গেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, যুগ্ম সচিব আজিজুল হকের নির্দেশে র‌্যাব গেছে সুলতানা জেসমিনের বাসায়, উনি (আজিজুল হক) বাসা চিনিয়ে দিয়েছেন। কোনো মামলা ছাড়া এতো বড় বেআইনি কাজ সরকারের একজন যুগ্ম সচিব কিভাবে করতে পারেন-এটা আমাদের প্রশ্ন। আমরা সুলতানা জেসমিনকে বেআইনিভাবে তুলে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার সাথে দায়ী র‌্যাব কর্মকর্তাবৃন্দ, সরকারের যুগ্ম সচিব আজিজুল হকের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানাচ্ছি।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, যায় যায় দিন সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার সম্পাদক আবু আসাদেরসহ অন্যান্য সাংবাদিক ও নাগরিকদের ওপরে মামলা দায়ের করে নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবানের পাশাপাশি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি বাতিলের দাবি জানান মহাসচিব।

নরসিংদীর পুলিশের ভূমিকার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকনের বাসার সঙ্গে দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে বুধবার জেলা কমিটির সভা ডাকা হয়। জেলা সদস্যরা উপস্থিত হয়ে দেখতে পান যে, কার্যালয়ে তালা লাগানো চারদিক থেকে পুলিশ ঘেরাও করে রেখেছে। সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে কার্যালয়ে যান এবং মিটিং শুরু করেন। মিটিংয়ের শেষের দিকে কিছু দুস্কৃতিকারী-দুর্বত্ত পুলিশের ছত্রছায়ায় দুইটি পুলিশ তারা মাঝখান দিয়ে এসে আক্রমন করে এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে জানালা-দরজা ভেঙে পড়ে যায়। ককটেল মিটিংয়ের মধ্যেও এসে পড়ে স্বাভাবিকভাবে মিটিংও পন্ড হয়ে যায়। একটি রাজনৈতিক দল তার জেলা কার্যালয়ে সভা করবে-এটা তার সম্পূর্ণ সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার বার বার চিৎকার করে বলছেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য কোনো বাধা দিচ্ছি না কোথাও। নরসিংদীর ঘটনাই প্রমাণ করে তারা বাঁধা দিচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশের সামনে কি করে দুস্কৃতিকারী কার্যালয়ে ঢুকলো এবং সভা পÐ করে দিলো।
রাজধানীতের বুধবার রাতে নিকুঞ্জের ৫ নং সড়কে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দল সভাপতি আবু হোরায়রা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দু, সহ দফতর সম্পাদক আনোয়ারের ওপর হামলার ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার নিন্দা ও দোষীদের গ্রেফতার দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব। সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
Copyright ©banglaislamicnews.com
Theme Customized By BreakingNews