নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর ৩১তম পবিত্র বংশধর, শাহ্জাদা সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভাণ্ডারী গত ১৪ রমজান, ৬ এপ্রিল, ২০২৩ মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফে ‘ইমাম হাসান (রাঃ) এর পবিত্র বেলাদত শরীফ’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহ্ফিলে বলেন, “নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার ওফাতের পর যে ৩০ বছর সময়কে খেলাফতের যুগ বলেছেন, সে হিসেবে ইমাম হাসান (রাঃ) মুসলিম জাহামের ৫ম খলিফা। তিনি হযরত শেরে খোদা মওলা আলি (রাঃ) এর শাহাদাতের পর ৬ মাস খেলাফতের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রিয় নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মত মদীনা শরীফ থেকে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। অত্যন্ত সফলতার সাথে তিনি রাষ্ট্রে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অজস্র মানুষ তার হাতে বায়াত গ্রহণ করেছেন। তিনি ইচ্ছা করলে আজীবন রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারতেন। কিন্তু মুসলমানদের মাঝে রক্তপাত যাতে না হয়, ইসলামের একতা, ভাতৃত্ব রক্ষার্থে তিনি নিজ ক্ষমতা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেন। এ সম্পর্কে নবীকরিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছিলেন, “আমার এই ছেলে ইমাম হাসান (রাঃ) এর কারণে মুসলিম উম্মাহ্ অনেক বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাবে।” এ এক বিরল দৃষ্টান্ত, মহানুভবতা যা পৃথিবীতে দ্বিতীয়বার দেখা যায় নি।”
শাহ্সুফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী আরো বলেন, “ইমাম হাসান (রাঃ) সত্য, ন্যায়, ধৈর্য ও আত্মত্যাগের সমুজ্জ্বল আদর্শ। তার চেহারা মুবারকের মাঝে রাসুলে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর চেহারা মুবারক দৃশ্যমান ছিল। তিনি পাক পাঞ্জাতনের একজন। তিনি ও তার স্নেহধন্য ছোট ভাই ইমাম হোসাইন (রাঃ) জান্নাতে যুবকদের মহান নেতা। রক্তপাত, সংঘাত থেকে মুসলিম জাহানকে রক্ষা করতে তিনি স্বীয় ক্ষমতা ত্যাগ করার মত মহৎ দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও, খারেজি মুনাফিক চক্র তাকে ৩ বার বিষপান করায় এবং তিনি শাহাদাত বরণ করেন। যারা তাকে নির্মমভাবে শহিদ করেছিলো, তাদেরকে তিনি চিনতেন। কিন্তু তাদের পরিচয় প্রকাশ করেন নি কারণ এ বিষয় নিয়ে তিনি মুসলিম উম্মাহর মাঝে সংঘাত চান নি। তিনি মহান আল্লাহ্ ও রাসুলে করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট এর বিচার জানিয়েছেন। বর্তমান সংঘাতময় বিশ্বে যদি ইমাম হাসান (রাঃ) এর আদর্শে উজ্জীবীত সুযোগ্য নেতৃত্ব থাকতো তবে পৃথিবী শান্তির নীড়ে পরিণত হত। যুগে যুগে আহলে বাইতে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গণ প্রিয় নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মহান আদর্শকে ধারণ করেছেন। তাই তাদের স্মরণ ঘরে ঘরে জাগ্রত করতে হবে।
দোজাহানের বাদশাহ্ হুযুরপুর নূর, আহমদ মুজতবা, মুহাম্মদ মুস্তফা, প্রিয় নবিজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এবং সম্মানিত আহলে বাইতে রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গণের প্রতি সশ্রদ্ধ সালাতু সালাম নিবেদন শেষে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে মুনাজাতে বিশ্ববাসীর কল্যাণে প্রার্থণা করেন শাহ্সুফি সাইয়্যিদ সাইফুদ্দীন আহমদ আল হাসানী ওয়াল হোসাইনী মাইজভাণ্ডারী।
Leave a Reply