বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের ব্যবস্থাপনায় শনিবার (১ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৪টায় রাজধানীর একটি হোটেলে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা, কূটনীতিক ও পেশাজীবীদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম এ মতিনের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য দেন, ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ।
এ ছাড়া অতিথি ছিলেন, ইরান দূতাবাসের সেকেন্ড অফিসার জাবেদ আসকারি, পীরে তরিকত সৈয়দ শহীদ উদ্দিন মাইজভাণ্ডারী, গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জাকির হোসাইন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা সালা উদ্দীন সাকিব, আহলে সুন্নাতের প্রেসিডিয়াম মোঃ ইকবাল, মোঃ শাহ আলম, মোবারক হোসাইন ফরাজী। দপ্তর সচিব মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আবু সুফিয়ান আবেদী আলকাদেরী, এম. সোলায়মান ফরিদ, সৈয়দ মুজাফ্ফর আহমদ মোজাদ্দেদী, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, অধ্যক্ষ আবু জাফর মঈনুদ্দীন, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পীরজাদা গোলামুর রহমান আশরাফ শাহ প্রমুখ।
.
.
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট চেয়ারম্যান আল্লামা এম.এ মতিন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসে বিভিন্ন দেশে রোজাদারদের সুবিধার্থে দ্রব্যমূল্য কমিয়ে দেয়া হয়। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে আমাদের ব্যবসায়ীদের এতই নৈতিক বিপর্যয় হয়েছে যে, পবিত্র রমজান মাস আসলেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য যেন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। সিন্ডিকেট, মজুদদারী ও কালোবাজারি অসাধু ব্যবসায়ীরা এবার পবিত্র রমজানেও কয়েকগুণ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে রোজাদারদের কষ্ট দিচ্ছে, সর্বসাধারণের জীবনমানকে অসহনীয় করে তুলেছে। সরকার এসব সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। আমরা সরকারের নিকট এ ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে বাজার নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স গঠন ও মোবাইল কোর্টের অভিযান আরো বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি দারিদ্র বিমোচনে ইসলামের অন্যতম ভিত্তি যাকাত ব্যবস্থাপনার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘যাকাত গরীবের প্রতি অনুকম্পা নয়, বরং ধনীর সম্পদে গরীবের অধিকার। তাই বিত্তশালীরা ইসলামী যথা নিয়মে যাকাত প্রদান করলে দেশে দারিদ্রতা দূর করা সম্ভব।’ তিনি আরো বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে দেশের মানুষ শঙ্কিত। আমরা লাশের রাজনীতি চাই না, চাই না হিংসাত্মক বা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি। আমরা চাই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও সকল দলের অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এ জন্য যা যা করা প্রয়োজন সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মহাসচিব অধ্যক্ষ স.উ.ম আবদুস সামাদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয়, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’- এ অভিযোগ থেকে নির্বাচন কমিশন ও সরকার বের হয়ে আসবে। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। দেশের শান্তিকামী জনগণেরও এটাই দাবি। এ জন্য আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) সংসদীয় আসন উপ-নির্বাচনে আমি প্রার্থী হয়েছি। এ নির্বাচনে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য এসিড টেস্ট বটে। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে এ উপ-নির্বাচন সম্ভবত সর্বশেষ নির্বাচন। আমরা শেষ ভালো দেখতে চাই। গোপন বুথে কোন ভুত দেখতে চাই না, জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ চাই।’
.
.
তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদ যাত্রায় জনগণের চরম ভোগান্তি হয়। সড়ক ও নৌ দূর্ঘটনা ঘটে । আমরা আশা করব, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। জনগণের ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে পর্যাপ্ত গণপরিবহন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। ফিটনেস বিহীন গণপরিবহন ও নৌযান চলাচল বন্ধ করতে হবে। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র, সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ গড়তে প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকে সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানান।’
Leave a Reply