সৌদি আরবের সাথে ইরানের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার পর আমেরিকা ও ইসরাইল চিন্তিত ও হতাশ হয়ে পড়েছিল।
হতাশার এই রেশ কাটতে না কাটতেই আরব দেশগুলোর সাথে সিরিয়ার সম্পর্ক স্থাপনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় বিশেষ করে আসন্ন আরব লীগের বৈঠকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের উপস্থিতির বিষয়ে ওয়াশিংটন ও তেলআবিব আরো বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলোর সাথে সিরিয়ার সম্পর্ক স্থাপন এবং এ অঞ্চলের প্রভাবশালী দুই দেশ ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরুর বিষয়ে সমঝোতা হওয়ার পর তেহরানের বিরুদ্ধে আরব ও আন্তর্জাতিক জোট গঠনের ইসরাইলি স্বপ্ন কার্যত ভেস্তে গেছে। ইসরাইলি গণমাধ্যমগুলো আরব দেশগুলোর সাথে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে তেলআবিবের ভয় ও উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে বলেছে, এটা ইসরাইলের জন্য যেমন শুভকর নয় তেমনি ইরানের সাথে আরব দেশগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও উদ্বেগজনক বিষয়। ইসরাইলি সংবাদপত্র মা’আরিভ আরব লীগে সিরিয়ার প্রত্যাবর্তন এবং কয়েকটি আরব দেশের সাথে দামেস্কের নৈকট্যকে “নতুন মধ্যপ্রাচ্য” বলে বর্ণনা করেছে। আরব লীগের শীর্ষ বৈঠকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের উপস্থিতিও ওই দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এ ছাড়া, ইসরাইলি দৈনিক হারেতস ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে মধ্যপ্রাচ্য এবং এর বাইরের নতুন মানচিত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে। দৈনিকটি আরো লিখেছে, তেহরান-বিয়াদ সম্পর্ক ইরানের বিরুদ্ধে আরব ও আন্তর্জাতিক জোট গঠনের ইসরাইলি স্বপ্ন ধুলিস্যাত করে দিয়েছে এবং নতুন করে পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর ফলে এ অঞ্চলে চীনের শক্তি ও প্রভাব বৃদ্ধি পাবে এবং আমেরিকার প্রভাব দুর্বল হয়ে পড়বে। এই উদ্বেগ আমেরিকার গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক মহলেও লক্ষ্য করা গেছে। মার্কিন গবেষণা কেন্দ্র থিংক ট্যাঙ্ক জানিয়েছে তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে চীনের মধ্যস্থতা করার কয়েক সপ্তাহ পর সৌদি আরব ও সিরিয়ার ঘনিষ্ঠতাকে রাশিয়ার জন্য কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছে। এই পরিবর্তন কূটনৈতিক উপায়ে সিরিয়া সমস্যার সমাধান এবং আমেরিকার ওপর সৌদি আরবের নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
ইসরাইল এ জন্য চিন্তিত ও হতাশ যে সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে তারা এই মুসলিম দেশটিকে ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিতে পারবে এবং সিরিয়ার আরো কিছু এলাকা দখল করে নিতে পারবে। কিন্তু ইসরাইলের সেই স্বপ্ন ভেস্তে গেছে।
মোটকথা, আরব দেশগুলোর সাথে ইরান ও সিরিয়ার সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় ইসরাইল ও আমেরিকা চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
Leave a Reply