আজ ইরানে নওরোজ বা নববর্ষ। ইরান, ইরাক, তুরস্ক, আজারবাইজান, তুর্কেমেনিস্থান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্থান, পাকিস্তানসহ সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বসন্ত-পারস্য সৌর বর্ষের প্রথম দিন “নওরোজ” পালিত হয়।
নওরোজ ইরানীদের মূল উতসব। নওরোজকে কেন্দ্র করে গোটা ইরানে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। বছর শেষ হওয়ার আগেই সবার বাড়ি-ঘর ধোয়া-মুছা অর্থাত পরিষ্কারের আয়োজন চলে। কেউ কেউ বাড়িতে চুনকাম-রং পর্যন্ত করেন। নওরোজ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ১৫-২০ দিন বন্ধ থাকে।
নওরোজের ছুটিতে ইরানীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে ভ্রমণে বেড়িয়ে পড়েন। বছরের এসময়েই তারা আত্নীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়ানো, খোঁজ-খবর নেয়ার পর্বটা সাড়েন। কেউ কেউ ছুটে যান মাশহাদ শহরে অবস্থিত নবী বংশের অষ্টম ইমাম হযরত আলী ইবনে মুসা আর-রেযা আ.-এর মাযারে। সেখানে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হযরত আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ী নওরোজের শুভেচ্ছা বিনিময় করে বিগত বছরে ইরানের অবস্থা ও নতুন বছরের ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে জনগণকে অবগত করে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। ইরানীদের কেউবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এলাকাগুলোতে বেড়াতে যান। এক্ষেত্রে বেশিরভাগই উত্তরের সবুজ, বন-জঙ্গলে ভরা কাস্পিয়ান সমুদ্রের উপকূলকে বেঁছে নেন।
ইসলাম গ্রহণের আগে অধিকাংশ ইরানীই হযরত যারতুস্ত আ.-এর অনুসারী বা যারতুস্ত (জরাথুস্ত্র) ধর্মের অনুসারী ছিলেন। নওরোজকে কেন্দ্র করে ইসলামপূর্ব কিছু কিছু কুসংস্কার এখন ইরানীদের মাঝে বিদ্যমান। ইরানের আলেমরা সে কুসংস্কারগুলোকে ভালো কাজের মাধ্যমে পরিবর্তন করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যার ফলে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পূর্বের তুলনায় বর্তমানে সে কুসংস্কারগুলো অনেকাংশে কমে এসেছে।
নওরোজে ইরানীরা পাঠ করেন-
«یا مقلب القلوب و الابصار، یا مدبر اللیل و النهار، یا محول الحول و الاحوال، حول حالنا الا أحسن الحال»
“ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুবি ওয়াল আবসার, ইয়া মুদাওয়িরাল লাইলি ওয়ান নাহার, ইয়া মুহাববিবাল হাওলে ওয়াল আহওয়াল, হাওয়্যিল হালানা ইলা আহসানিল হাল।”
অর্থাত- হে অন্তরসমুহ, দৃষ্টি সমুহের পরিবর্তন কারী, হে রাত ও দিনের পরিবর্তন কারী, হে অবস্থার পরিবর্তন কারী, আমাদের অবস্থার উত্তম পরিবর্তন দিন।
Leave a Reply